ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্যগুলি আলোচনা কর | (objectives of management)

Share Knowledge

যে কোনো প্রতিষ্ঠানে বা সংস্থাতে ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্য থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় । কারণ উদ্দেশ্যের দ্বারা প্রতিষ্ঠানের ক্রিয়াকলাপকে কার্যকরভাবে করতে সহায়তা করে । যেমন – সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ, সম্পদ বরাদ্দ, কর্মদক্ষতা, এবং লক্ষ অর্জন ইত্যাদির দিকনির্দেশ প্রদান করে । তাই এখানে আমরা জানব ব্যবস্থাপনাকে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ অর্জনের জন্য কি কি উদ্দেশ্যগুলি রাখতে হবে তা নিয়ে আলোচনা করব ।

ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্যগুলি আলোচনা কর | (objectives of management)

ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্যগুলি:

ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্যগুলিকে পাঁচটি ধাপে ভাগ করা যায় । সেগুলি হল –

১) সাংগঠনিক উদ্দেশ্য (organizational objectives),

২) সামাজিক উদ্দেশ্য (Social objectives),

৩) ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য (personal objectives),

৪) কার্যকরী উদ্দেশ্য Functional objectives),

৫) কৌশলগত উদ্দেশ্য (Strategic objectives)

এই সব উদ্দেশ্যগুলি নিচে আলোচনা করা হল-

১) সাংগঠনিক উদ্দেশ্য :

প্রতিষ্ঠানের লক্ষ অর্জন ও সর্বাধিক মুনাফার সাথে সেই প্রতিষ্ঠানের উন্নতি করাই সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য । এই উদ্দেশ্যগুলি সাধারণত তিন ভাগে বিভক্ত । সেগুলি হল –

ক) দীর্ঘমেয়াদি টিকে থাকা (survival):

প্রতিষ্ঠানকে নিশ্চিত করতে হবে যাতে দীর্ঘ সময়ের জন্য লক্ষ অর্জনের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকে ।

খ) মুনাফা (profit):

সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য হল মুনাফা অর্জন করা । মুনাফা (profit) অর্জনের মাধ্যমে ব্যবসায় উন্নতিতে সাহায্য করে ।

গ) প্রবৃদ্ধি (Growth):

এই সাংগঠনিক উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের উন্নতি এবং সম্প্রসারণ করা ।

২) সামাজিক উদ্দেশ্য :

সামাজিক উদ্দেশ্যগুলি নিশ্চিত করে সংস্থানটি তার মুল লক্ষ পূরণ করার সাথে সমাজে একটি ইতিবাচক (positive) ভুমিকা পালন করা। সেগুলি হল –

  1. সঠিক মূল্যে ভালো মানের পণ্য প্রদান করা ।
  2. কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে চাকরি প্রদান করা ।
  3. সমাজে কিছু সম্প্রদায়ের প্রতি আর্থিক সহায়তা করা ।
  4. সংগঠনে উন্নতির সাথে দেশ ও লোকের অর্থনৈতিক উন্নতি করা ।
  5. সামাজিক কার্যক্রম, যেমন – রক্তদান শিবির, খাদ্য ধান এবং NGO-এর সাথে মিলে সামাজিক কাজকর্ম করা ইত্যাদি ।
  6. সাংগঠনিক কার্যক্রমের দ্বারা পরিবেশে কোনো ধরনের ক্ষতি না হয় তা দেখা ।

৩) ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য :

এই উদ্দেশ্যগুলি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যকে লক্ষ করে । যেমন –

  1. কর্মীদেরকে সঠিক বেতন বা মজুরি দেওয়া ।
  2. তাদের ব্যক্তিগত বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ এবং যোগ্যতা বা দক্ষতা অনুযায়ী পদের উন্নতি করা ।
  3. তাদেরকে ভালো ও স্বাস্থ্যকর কাজের পরিবেশ প্রদান করা ।
  4. এবং সহকর্মীদের সাথে সম্মানে কাজ করা ।

৪) কার্যকরী উদ্দেশ্য :

এই উদ্দেশ্যে সংগঠনের সমস্ত কার্যক্রমগুলি দক্ষ এবং কার্যকর ভাবে হচ্ছে কিনা তা দেখা । যেমন – নির্দিষ্ট সময়, অর্থ, ও কর্মীর দ্বারা সর্বাধিক উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা ।

৫) কৌশলগত উদ্দেশ্য :

সংগঠন কৌশলগত পদ্ধতির মাধ্যমে নিজেকে আলাদা রাখতে হবে । যাতে সংস্থানটি প্রতিযোগিতার মধ্যে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত টিকে থাকে এবং উন্নতি লাভ করে । কিছু পদ্ধতিগুলি হল – উদ্ভাবন, গ্রাহক পরিসেবা, ব্র্যান্ড তৈরি ও নতুন আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার ইত্যাদি ।  

আরও পড়ুনঃ ব্যবস্থাপনা কাকে বলে: বৈশিষ্ট, গুরুত্ব এবং কার্যাবলীর বিস্তারিত আলোচনা ?

উদাহরণ / Case Studies :

এই উদাহরণের মাধ্যমে আমরা জানব ব্যবস্থাপনার কার্যকর উদ্দেশ্য প্রতিষ্ঠানের উন্নতিতে সাহায্য করে । যেমন –

ক) উদ্দেশ্যগুলির সফল বাস্তাবায়ন :

গুগল (google) এবং অ্যাপেল (apple) -এর মতো কোম্পানি গুলি উচ্চাকাঙ্ক্ষী, স্পষ্ট, এবং উদ্ভাবন উদ্দেশ্য থাকায় উন্নতি লাভ করেছে ।

খ) উদ্দেশ্যগুলির ব্যর্থ বাস্তাবায়ন :

আবার, অন্যদিকে যে কোম্পানির উদ্দেশ্যগুলি পরিবর্তিত পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে ব্যর্থ হয় । যেমন – কোডাক (kodak)- এর মতো কোম্পানি আধুনিক যুগে দ্রুত পরিবর্তন করেননি, যা নমনীয়তা, এবং উদ্ভাবনে ব্যর্থ হয় ।

উপসংহার:

প্রতিষ্ঠানের উন্নতি বা লক্ষ অর্জনের জন্য ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্য থাকা অত্যন্ত অপরিহার্য । যদি ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্যগুলি সথিকভাবে পালন করা না হয় তাহলে লক্ষ অর্জনে ব্যর্থ হয় । তাই প্রতিস্থানকে লক্ষ রাখতে হবে কার্যক্রম গুলি উদ্দেশ্য অনুযায়ী হয় ।

এই পোস্টটি পড়ে  আপনার যদি  কোনো জিজ্ঞাসা বা কিছু বলার থাকে নিচে কমেন্ট (comment) করতে পানের । আর আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে এখানে Ask Question ক্লিক করে আমাদের প্রশ্ন পাঠাতে পারেন ।     


Share Knowledge

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top